কোলকাতার পথে মধুমতি

ডেস্ক: কোলকাতা যাচ্ছে এমভি মধুমতি, এখবর অনেক পুরাতন। এখন সত্যি সত্যিই মধুমতি বাংলাদেশের শেষ সিমানায়। পাগলা থেকে ছেড়ে বুড়িগঙ্গা হয়ে শীতলক্ষ্যা, মেঘনা, পদ্মা, কীর্তনখোলা। সন্দ্ব্যা নদী, সুগন্ধা, ধানসিঁড়ি, গাবখান চ্যানেল, কচা, বলেশ্বর নদীসহ কত নদী পেরিয়ে ঘষিয়াখালি। অতপর মংলা নদী দিয়ে পশুর নদী বুক চিরে মধুমতি ঢুকে পড়েছে সুন্দরবনে। নদীর চারপাশে সবুজ-সুন্দর বাংলাদেশ। ছোট ছোট ঘরবাড়ি। কোথাও ঘেরের পর ঘের। অনিন্দ্য সুন্দর বাংলাদেশ পর্যটকদের দেখাতেই মধুমতি ছুটছে কলকাতা বন্দর অভিমুখে।

জাহাজের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত সাতক্ষীরায় সুন্দরবনের আংটিহারায় রাত যাপন করবে মধুমতি। রবিবার ভোরে কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে জাহাজ। সোমবার বিকেল নাগাদ মধুমতি নোঙর করবে কলকাতায়। জাহাজে করে কলকাতা যাত্রায় ভীষণ খুশী যাত্রীরা। এই প্রথম কলকাতা যাচ্ছেন  গোপালগঞ্জের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ বাবু শেখ। তিনি বললেন, যখন শুনলাম জাহাজ যাবে কলকাতা তখনই পাসপোর্ট করলাম। এরপর ভিসা লাগালাম। কিন্তু ভিসা লাগিয়েও ছিলাম অনিশ্চয়তায়। কারণ নৌ রুট না থাকায় বিড়ম্বনায়। পরে বিআইডব্লিটিসির লোকজন ভিসার মধ্যে আরেকটি সীল এনে দেয় অ্যাম্বেসি থেকে।

আরো পড়ুন: নৌপথে কোলকাতা ভ্রমনের আদ্যপান্ত

বাবু বলেন, যাওয়া-আসা বাবদ তিন হাজার টাকা দিয়ে ডেকের টিকেট কেটেছি। এখন তো ভিষণ ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে না আসলে এমন সুন্দর জার্নি মিস করতাম।

বিআইডব্লিটিসির জেনারেল ম্যানেজার ক্যাপ্টেন শওকত সরদার বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি বিআইডব্লিটিসিতে যোগ দেই। আগে কখনও এই রুটে যাত্রিবাহী জাহাজ চলেনি। এই প্রথম যাত্রিবাহী জাহাজ যাচ্ছে, সত্যিই ভালো লাগছে। আমি চাচ্ছি এই যাত্রায় যেন আমরা সুন্দরভাবে কলকাতা পৌঁছাতে পারি। এই অভিজ্ঞতাকে আগামীতে কাজে লাগাবো। আমরা আশা করছি আজ সন্দ্ব্যার মধ্যেই আংটিহারা পৌঁছবো। সুন্দরবনে যেহেতু রাতে নেভিগেশন পাওয়া যাবে না, তাই রাতে আংটিহারাতে রাত যাপন করতে হবে।

দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মাহিবা মাহাসিন বলছিলেন, তার দারুণ লাগছে। আমি তো বছরে একবার দাদার বাড়ি যাই স্টিমারে। কিন্তু এই জার্নিটা অন্যরকম। এই জাহাজে করে দেশ ছেড়ে একেবারে বিদেশ। যাত্রাপথে কত সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখছি। সবুজ বাংলাদেশ দেখছি। এখন সুন্দরবন দেখতে দেখতে যাবো। কি যে মজা লাগছে। আমি ভীষণ এক্সসাইটেড। খুব মজা হচ্ছে।

এই যাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিআইডব্লিটিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মিশা বলেন, এই জাহাজ যাত্রা দুই দেশের মধ্যে পর্যটনের বিকাশে একটা ঐতিহাসিক দ্বার উম্মোচন করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকাবাহী যাত্রিবাহী জাহাজ কলকাতা যাওয়ার মধ্য দিয়ে একটি মাইলফলক স্থাপন হবে।

আরো পড়ুন: নৌপথে কোলকাতা ভ্রমনের আদ্যপান্ত